আশেপাশে খুঁজেও
বোনকে পাননি। বিষয়টি তিনি জানান পরিবারকে। পরে সোমবার তিনি গোলাপগঞ্জ থানায় গিয়ে
বোন হারানোর সাধারণ ডায়েরি করেন। পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করছিলো। গোলাপগঞ্জ থানা
পুলিশের পাশাপাশি জকিগঞ্জ থানা পুলিশও বিষয়টি নিয়ে অবগত ছিল। আর হঠাৎ করে নিখোঁজ
হওয়ার ঘটনায় পরিবারের মধ্যে দুশ্চিন্তা দেখা দেয়। শুক্রবার বিকালে দুবাই প্রবাসী
প্রেমিক আসাদের দুই স্বজনকে নিয়ে সিএনজি অটোরিকশাযোগে পিতার বাড়ি মানিকপুরের
মোহাম্মদপুরে যাচ্ছিলেন তামান্না। এ সময় জকিগঞ্জ থানা পুলিশ রতনগঞ্জের নিকটবর্তী
এলাকা থেকে তাকে উদ্ধার করে। রাতে নিয়ে যাওয়া হয় জকিগঞ্জ থানায়। উদ্ধারের পর তাকে
নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়। উদ্ধারের পর তামান্না পুলিশের কাছে নিখোঁজের ঘটনাটি খুলে
বলেন। সাংবাদিকদের সঙ্গেও কথা বলেন তামান্না। এ সময় তামান্না জানান, ‘প্রায় ৩ বছর
আগে দুবাইয়ে থাকা আসাদের সঙ্গে ইমুতে তার পরিচয় হয়। এরপর থেকে তাদের মধ্যে প্রেমের
সম্পর্ক গড়ে উঠে। আসাদ সব সময় তাকে ফোন দিতো। তারা ফোনে কথা বলতো। আসাদও বিবাহিত।
তবে বাড়িতে থাকা স্ত্রীর সঙ্গে তার বনিবনা নেই। এ কারণে সে ওই স্ত্রীকে ডিভোর্স
দেবে। এরপর আমাকে বিয়ে করবে।’ তামান্না জানান, ‘পূর্বের কথামতো ঘটনার দিন আমি যখন
ফার্মেসির সামনে যাই তখন আসাদের স্বজনরা গাড়ি নিয়ে আসেন ওখানে। ভাই মিজান পানি আনতে
গেলে ওদের সঙ্গে গাড়িতে করে চলে যাই।’ নিখোঁজের ৬ দিন সে গোলাপগঞ্জের কালিজুড়ি
গ্রামে আসাদের দুলাভাই শাহাবুদ্দিনের বাড়িতে ছিল বলে জানান। এরপর নিজ বাড়িতে যাওয়ার
পথে পুলিশ তাকে আটক করেছে। এদিকে জকিগঞ্জ থানা পুলিশ প্রবাসী বধূ তামান্নাকে
উদ্ধারের সময় সিএনজি অটোরিকশা থেকে দুবাই প্রবাসী আসাদের স্বজন সুহেল আহমদ ও আব্দুল
হককে গ্রেপ্তার করেছে। রাতে তারাও ছিল থানায়। জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানিয়েছে, আসাদের
পরামর্শ মোতাবেক তারা তামান্নাকে কালিজুড়ি নিয়ে গিয়েছিলো। সেখানে রাখার পর তাকে
পিতার বাড়ি ফিরিয়ে দিতে যাচ্ছিলো। নিখোঁজের ৬ দিন তামান্না কালিজুড়িতে আসাদের বোনের
বাড়িতে ছিল বলে জানায়। এদিকে জকিগঞ্জে উদ্ধার হলেও তামান্না নিখোঁজের জিডি দায়ের
করা হয়েছিলো গোলাপগঞ্জ থানায়। এ কারণে গতকাল শনিবার বিকালে গোলাপগঞ্জ থানা পুলিশ
আটক দুইজন সহ তামান্নাকে গোলাপগঞ্জ থানায় হস্তান্তর করেছে।
জকিগঞ্জ থানার ওসি মীর
মোহাম্মদ আব্দুন নাসের জানিয়েছেন, ঘটনাস্থল গোলাপগঞ্জ। জিডি করা হয়েছিলো ওই থানায়।
এ কারণে উদ্ধারকৃত তামান্না সহ দুইজনকে ওই থানায় পাঠানো হয়েছে। এদিকে তামান্নার এই
ঘটনায় ক্ষুব্ধ স্বামীর বাড়ি ও পিতার বাড়ির পরিবারের লোকজন। তাদের দাবি তামান্নাকে
জোরপূর্বক অপহরণ করা হয়েছে। তামান্নার ছোট ভাই মিজানুর রহমান মিজান জানিয়েছেন,
‘আমার বোনকে জোরপূর্বক অপহরণ করা হয়েছে। তামান্নার ছোট ভাই মিজানুর রহমান মিজান
জানিয়েছেন, ‘আমার বোনকে জোরপূর্বক ওরা গোলাপগঞ্জ সদর থেকে নিয়ে যায়। উদ্ধারের পর
থেকে বোনের মানসিক অবস্থা ঠিক নয়। তাকে মানসিকভাবে টর্চার করা হয়েছে। এ ঘটনায় আমরা
গোলাপগঞ্জ থানায় অপহরণ মামলা দায়ের করা হয়েছে।’ গোলাপগঞ্জ থানার ওসি আবুল কাশেম
জানিয়েছেন, তামান্না উদ্ধার হয়েছে এটি স্বস্তির খবর। এখন আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা
গ্রহণ করা হবে।
0 Comments
আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ